বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের শাস্তি না দেওয়ার প্রশ্নের উত্তর জিয়া দেননি
খুশবন্ত সিং
নিউজরাজশাহী.কম
প্রকাশিত : ১১:৩৩ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

খুশবন্ত সিং
[প্রখ্যাত ভারতীয় সাংবাদিক, লেখক খুশবন্ত সিং ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত প্রকাশ না করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়ার বৈশিষ্ট্যের বৈপরীত্য উল্লেখ করেছেন। তিনি যখন জানতে চান বঙ্গবন্ধুর কোনো ঘাতককে কেন গ্রেফতার করা বা শাস্তির বিধান করা হয়নি, তাঁর এ প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য না করে জিয়া অস্থিরভাবে হাতঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন।]
শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান দুজনের সঙ্গেই আমার অনেকবার সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমার জানামতে শুধু বাঙালি মুসলিম হওয়া ছাড়া তাদের উভয়ের মধ্যে আর কোনো বিষয়ে মিল ছিল না। মুজিবের উচ্চতা ছিল একজন বাঙালির গড় উচ্চতার চেয়ে বেশি, তাঁর ছিল শরীর মাংসল এবং পরনে থাকত ঢিলেঢালা পোশাক। জিয়া আকৃতিতে খাটো, তাঁর শরীর হালকা-পাতলা হলেও গঠন চাবুকের মতো শক্ত।
একবার তাঁর দেহরক্ষী আমাকে বলেছিলেন, ‘তাঁর এক মুষ্টাঘাত কোনো মানুষকে বেহুঁশ করে ফেলতে পারে।’
মুজিব অত্যন্ত আন্তরিক, উষ্ণ-হৃদয়ের, বহির্মুখী এবং কথা বলতে অভ্যস্ত ছিলেন; জিয়া সুদূরের, গম্ভীর এবং অল্প কথা বলেন।
মুজিবের দফতর মুঘল আমলের প্রাচ্যদেশীয় দরবারের মতো: কয়েক ডজন মানুষ কার্পেটের ওপর, সোফা ও চেয়ারের ওপর ছড়িয়ে বসে থাকে, দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে। সারাক্ষণ একটির পর একটি টেলিফোন বাজে; তিনি ফোনে কথা বলার পাশাপাশি উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে যিনিই তাঁর মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন তার সঙ্গে কথা বলছেন এবং তাঁর সামনে টেবিলে রাখা কাগজপত্রে স্বাক্ষর করছেন। পুরো বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশ।
জিয়ার অফিস তাঁর মতোই শীতল। ওয়েটিং রুমে তাঁর সচিব ও নিরাপত্তা কর্মীরা বিচক্ষণতার সঙ্গে আপনাকে মার্জিত কথাবার্তার মধ্যে ব্যস্ত রাখেন এবং তাদের সতর্ক দৃষ্টি খুঁজে ফিরে আপনার কাছে কোনো গোপন অস্ত্র আছে কিনা। একসঙ্গে একজনের বেশি দর্শনার্থীকে তিনি স্বাগত জানান না এবং সময় মেনে চলেন স্টপওয়াচের মতো। তাঁর রুমে হুট করে অঘোষিতভাবে প্রবেশ করার সাহস কারও নেই। কোনো টেলিফোনও বাজে না। আপনার প্রশ্নগুলো বাতাসে জমে থাকবে; তাঁর নির্দিষ্ট-পরিমিত উত্তর আপনার জমাট প্রশ্নগুলোকে গলাতে পারবে না।
মুজিব আপনাকে আলিঙ্গন করবেন এবং দ্বিতীয় সাক্ষাতে আপনার তাঁর ‘পুরনো বন্ধু’ বলে সম্বোধন করবেন। জিয়া তাঁর শীতল হাতে আপনার সঙ্গে হাত মেলাবেন এবং চিনতে পারার স্বীকৃতি হিসেবে অস্পষ্ট, ম্লান হাসবেন।
মুজিব নিজের সম্পর্কে স্বয়ং তৃতীয় পুরুষে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন’, এবং আপনার কাছেও অনুরূপ সম্বোধন আশা করবেন। জিয়া কখনো তাঁর মুখ খোলেন না, অথবা তাঁর সঙ্গে কাউকে খুব ঘনিষ্ঠ হতে দেন না। তিনি সবসময় ‘মিস্টার’, ‘প্রেসিডেন্ট,’ ‘স্যার’ ছিলেন।
জিয়াউর রহমান তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করার দুই বছর পর তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। সামরিক একনায়কদের ব্যাপারে আমার আপত্তি ও নেতিবাচক মনোভাব ছিল এবং এমন একজনের প্রতি ভিন্ন ধরনের বিতৃষ্ণা ছিল, যিনি মুজিবের ঘাতকদের শাস্তি বিধান করার পরিবর্তে তাদের কূটনৈতিক দায়িত্বে ন্যস্ত করার মাধ্যমে পুরস্কৃত করেছিলেন। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে অতিবাহিত করা সপ্তাহে ঢাকার পরিবেশের যতটুকু দেখা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে, তাতে আমি অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছি। মাত্র কয়েক বছর আগেও যে এলোমেলো নগরীতে বিরাজ করছিল চরম বিশৃঙ্খলা, সেখানে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় গড়ে ওঠা শপিং সেন্টার ও মার্কেটগুলো দেখে সমৃদ্ধির সুস্পষ্ট লক্ষণ বোঝা যায়।
দেশটিতে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঢাকার বাইরে পল্লীগুলোকে আরও সবুজ, আরও পরিচ্ছন্ন এবং আমি আগে যেমন দেখেছি তার চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী মনে হয়েছে। আমি জিয়াকে একথা বলার পর তাঁকে অত্যন্ত সন্তুষ্ট মনে হয় এবং তিনি তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎকারের সময় প্রলম্বিত করেন। তাঁর কাছে আমার শেষ প্রশ্ন ছিল তাঁর দেশে ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাব সম্পর্কে।
অনেক দেয়ালের ওপর স্লোগান লেখা: ‘ভারতীয় কুকুর, হটে যাও’, ‘বাংলাদেশের ওপর থেকে হাত গুটিয়ে নাও’। আমি জিয়ার কাছে জানতে চাই যে, তিনি তাঁর দেশে ভারতীয় হস্তক্ষেপের কোনো দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে পারেন কিনা। তিনি যা বলতে পারলেন, তা হলো ভারত সরকার কর্তৃক বাঘা সিদ্দিকী ও শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান।
আমি তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য দায়ী একজনকেও কেন গ্রেফতার করা বা শাস্তি প্রদান করা হয়নি? আমার প্রশ্নে তিনি কোনো মন্তব্য করলেন না; বরং অধৈর্যের মতো তাঁর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন। আমি জানতাম, সাক্ষাৎকারের সময় শেষ হয়েছে।
সেই সন্ধ্যায় আমিই ছিলাম জিয়ার শেষ দর্শনার্থী। করিডোর দিয়ে আমার কয়েক গজ সামনে বিশালদেহী দুজন দেহরক্ষীর অবস্থানের মাঝখান দিয়ে তিনি হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখনই আমি লক্ষ্য করলাম যে আকৃতিতে তিনি কতটা খাটো ছিলেন- পাঁচ ফুটের সামান্য বেশি। তিনি হাই-হিল জুতা পরতেন।
অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু
(খুশবন্ত সিং এর ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য রিডিকুলাস’ থেকে) [সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন]
- রাবির সাবেক ছাত্র শাওনের ‘মৃত্যু আমাদের প্রতিবেশী’র মোড়ক উন্মোচন
- পুঠিয়ায় আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
- পুঠিয়ায় আদীবাসী নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের
- মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসকানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
- চারঘাট পৌর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ৭
- পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা বর্জন করলেন ইউপি চেয়ারম্যানরা
- জাল কাগজেই সব কারবার বাগমারার ইউপি চেয়ারম্যান মকলেসুরের!
- রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ হাজার ৭২৯ জন
- নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীর ভোট করে জেল খেটেও নৌকা চান মেয়র তোফাজ্জল
- বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ২১ লাখ ৩৯ হাজার ছাড়ালো
- রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
- ২৩ জানুয়ারি স্বপ্নের ঠিকানায় যাচ্ছে পুঠিয়ার গৃহহীনরা
- বাগমারায় চলছে অবৈধভাবে পুকুর খননের কাজ
- উপজেলা পরিষদ কার্যকরের দাবি জানালেন রাজশাহীর চেয়ারম্যানরা
- পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- পুঠিয়ার বিদায়ী মেয়র রবিসহ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমপির মামলা
- দুর্গাপুরে প্রতিপক্ষের মারপিটে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু, একজন আটক
- পুঠিয়া উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন
- রাজশাহীর কাটাখালীতে আ’লীগ, পুঠিয়ায় বিএনপির জয়
- উপজেলা পরিষদ কার্যকরের দাবি জানালেন রাজশাহীর চেয়ারম্যানরা
- স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত
পুঠিয়ায় নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা - পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
- ২৩ জানুয়ারি স্বপ্নের ঠিকানায় যাচ্ছে পুঠিয়ার গৃহহীনরা
- রাজশাহীর ৪ পৌরসভায় নৌকার টিকিট পেলেন যারা
- উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে ইউএনও কীভাবে সভাপতি হন: হাইকোর্ট
- চারঘাট পৌর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ৭
- অকালে চুল পাকা রোধে কী করবেন
- পুঠিয়ায় আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
- ‘সন্ধানী’র রামেক ইউনিটের সভাপতি নিশীথ, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন