যেভাবে চালু হয় রাজশাহীর ঐতিহ্য ‘ঢোপকল’
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিউজরাজশাহী.কম
প্রকাশিত : ০৫:০৩ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:২৬ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার

বাংলাদেশের শহরগুলোর মাঝে রাজশাহী নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রম নাম। এর শান্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। নির্মল ও শান্ত পরিবেশ উত্তরের এই শহরটিকে এনে দিয়েছে দেশজোড়া খ্যাতি।
প্রতিটি শহরেরই একটা অতীত ইতিহাস থাকে। থাকে কিছু ঐতিহ্য। এগুলো নিয়ে শহরের নাগরিকদের থাকে গর্ব। রাজশাহীও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজশাহীর আছে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য।
আধুনিক মহানগরীর ভাঁজে ভাঁজে এখনও দেখা যায় সেসব ঐতিহ্যের কিছু কিছু নিদর্শন। এমনই এক ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো রাজশাহীর ঢোপকল। আজ আপনাদের সেই ঢোপকল সম্পর্কে জানাবো-
ঢোপকল রাজশাহী শহরের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্য। এই ঢোপকলের সঙ্গে রাজশাহীর সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িত। মহারানি হেমন্ত কুমারীর প্রচেষ্টা ও অনুদানে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহীবাসীর জন্য সার্বক্ষণিক বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।
এই প্রকল্প মহারানি হেমন্ত কুমারী ওয়াটার ওয়ার্কস নির্মিত হয় যার অন্যতম নিদর্শন রাজশাহী শহরে অবস্থিত এই ঢোপকলসমূহ। এই ঢোপকল তৈরীর সময়ে রাজশাহী তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন রায় ডি এন দাশগুপ্ত।
সে সময় রাজশাহী শহরে পানযোগ্য পানির খুব অভাবছিল। বিশুদ্ধ পানির খুবই অভাব ঘটেছিল তখন। যার ফলশ্রুতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল কলেরা-আমাশয় সহ নানারকম পেটের পীড়া। বেশ কিছু লোকের মৃত্যুও ঘটেছিল সেই সময় এই অসুখের জন্য।
রায় ডিএন দাশগুপ্ত রাজশাহী পৌরসভার চেয়ারম্যান (১৯৩৪-৩৯) থাকাকালে রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেন। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় রাস্তার মোড়ে মোড়ে পানির কল স্থাপন করা হবে।
১৯৩৭ সালের অগাষ্ট মাসের কোনো একটি দিনে মিনিষ্ট্রি অব ক্যালকাটার অধীনে রাজশাহী ওয়াটার ওয়াকর্স নামে পানি সরবরাহ ও বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ব্যয় করা হয় প্রায় আড়াই লাখ টাকাও বেশি।
এই কাজে নগরীর নামকরা ধনী লোকেদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। সেই সূত্র ধরেই মহারানি হেমন্তকুমারী নিজেই দান করেন প্রায় ৬৫ হাজার টাকা।
বিশাল অঙ্কের একক অনুদানের কারণে রাজশাহী জেলা বোর্ডের দান করা জমিতে মহারানি হেমন্ত কুমারীর নামেই ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপিত হয়। কালক্রমে তার নাম হেমন্তকুমারী ঢোপকল নামেই পরিচিত হতে থাকে।
পুরো শহর জুড়ে প্রায় শতাধিক এমন ঢোপকল স্থাপন করা হয়। মহারানি হেমন্তকুমারী পানি শোধন কেন্দ্রে পানিকে বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট করে পানি থেকে আয়রন ও পানির ক্ষারতা দূর করা হতো। তারপর সেটা সরবরাহ করা হতো সেই ঢোপগুলোতে।
তবে সর্বপ্রথমে সেটা পাথরকুঁচির ফিল্টার দিয়ে পানি ফিল্টার করা হতো। এরপর সেটা সিমেন্টের তৈরী মোটা পাইপের সাহায্যে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হতো। এই ঢোপকলগুলোর প্রতিটির পানি ধারণক্ষমতা ৪৭০ গ্যালন।
প্রতিটি ঢোপকলেই ছিল একটি রাফিং ফিল্টার। এতে বালি ও পাথরের স্তর থাকায় সরবরাহ করা পানি আরও পরিশোধিত হয়ে বের হতো এবং গরমের সময় মোটামুটি ঠান্ডাও থাকতো। সেই সময় সারাদিনে মাত্র দুই ঘণ্টা পানি সরবরাহ করা হতো।
মোড়ে মোড়ে ঢোপকলগুলোতে পানি ধরে রাখা হতো। ফলে সারাদিনই পানি পাওয়া যেত। প্রতি দুই মাস পর পর এই ঢোপকলগুলোকে পরিষ্কার করা হতো। পরিষ্কারের নিয়মটি ছিল খুবই ভালো। এই ঢোপকলের উপরের ঢাকনাটি খোলা যেত।
তারপর ভিতরে মানুষ নেমে ব্লিচিং পাউডার ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে সেটা পরিষ্কার করতো। প্রতি দুই মাস পর পর প্রত্যেকটি ঢোপকল থেকে পানির স্যাম্পল সংগ্রহ করা হতো। পরে সেটা পাঠানো হতো পরীক্ষাগারে পানির মান ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য।
ঢোপকলগুলো লম্বায় প্রায় ভূমি থেকে ১২ ফুট উঁচু এবং ব্যাস প্রায় ৪ ফুট। ঢোপকলগুলো তৈরি করা হয়েছিল সিমেন্টের ঢালাই করে। এই ঢোপকলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঢেউ খেলানো একটা প্লাষ্টার করা হতো। যে নকশাটা করা হতো টিনের সাহায্যে।
চারিদিকে টিনের একটা রাউন্ড বানিয়ে তার মধ্যে সিমেন্ট আর ইটের খোয়ার ঢালাই ঢেলে দেয়া হতো। এর ঢালাই খুবই শক্ত। সহজে কোনো কিছুর ধাক্কায় বা আঘাতে এটা ভাঙ্গে না। তবে এই ঢোপকলগুলোর অধিকাংশই বর্তমানে বিলুপ্ত।
মহানগরীর বেলদারপাড়া, ফায়ারব্রিগেড মোড়সহ হাতেগোনা কিছু এলাকায় কয়েকটি ঢোপকল থেকে এখনো পানি সরবরাহ করা হয়। তবে ঢোপকলের জন্য পানি সরবরাহের যে ব্যবস্থা চালু ছিল, সেটা এখন আর নেই।
ঢোপকলে পানির সংযোগ এখন মহানগরীর উপকণ্ঠে স্থাপিত পানি শোধনাগারের সঙ্গে। রাজশাহীর ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য কিছু ঢোপকল চালু রাখা যেতে পারে। যেগুলো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে রাজশাহী মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মোড়ে।
স/এমএস
- মাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে উপজেলা আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন তুললেন রেজাউল হক
- নগর পুলিশের অভিযানে আটক ৩৯ মাদকদ্রব্য উদ্ধার
- রাবির সাবেক ছাত্র শাওনের ‘মৃত্যু আমাদের প্রতিবেশী’র মোড়ক উন্মোচন
- পুঠিয়ায় আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
- পুঠিয়ায় আদীবাসী নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের
- মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসকানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
- চারঘাট পৌর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ৭
- পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা বর্জন করলেন ইউপি চেয়ারম্যানরা
- জাল কাগজেই সব কারবার বাগমারার ইউপি চেয়ারম্যান মকলেসুরের!
- রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ হাজার ৭২৯ জন
- নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীর ভোট করে জেল খেটেও নৌকা চান মেয়র তোফাজ্জল
- বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ২১ লাখ ৩৯ হাজার ছাড়ালো
- রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
- ২৩ জানুয়ারি স্বপ্নের ঠিকানায় যাচ্ছে পুঠিয়ার গৃহহীনরা
- বাগমারায় চলছে অবৈধভাবে পুকুর খননের কাজ
- পুঠিয়ার বিদায়ী মেয়র রবিসহ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমপির মামলা
- দুর্গাপুরে প্রতিপক্ষের মারপিটে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু, একজন আটক
- পুঠিয়া উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন
- উপজেলা পরিষদ কার্যকরের দাবি জানালেন রাজশাহীর চেয়ারম্যানরা
- স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত
পুঠিয়ায় নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা - পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
- ২৩ জানুয়ারি স্বপ্নের ঠিকানায় যাচ্ছে পুঠিয়ার গৃহহীনরা
- চারঘাট পৌর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ৭
- রাজশাহীর ৪ পৌরসভায় নৌকার টিকিট পেলেন যারা
- উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে ইউএনও কীভাবে সভাপতি হন: হাইকোর্ট
- পুঠিয়ায় আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
- অকালে চুল পাকা রোধে কী করবেন
- ‘সন্ধানী’র রামেক ইউনিটের সভাপতি নিশীথ, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন
- জাল কাগজেই সব কারবার বাগমারার ইউপি চেয়ারম্যান মকলেসুরের!